ঋতম্ভরা বন্দোপাধ্যায় , কলকাতা : আমাদের এই বর্তমান যুগে এখন বাচ্চারা খেলাধুলাই ভুলে গেছে যেন! বাইরে বেরোয় না শুধু তারা ঘরে থাকতে চায় আর মোবাইল বা কম্পিউটার নিয়ে বসে যায় । তারা এ ছাড়া কিছুই করতে চায় না । আগে বাচ্চারা কতো রকম খেলাধুলা করতো মন ভালো থাকতো প্রাণবন্ত হতো । কিতকিত, হাডুডু, সাপ সিঁড়ি লুডো, ক্যারাম , লুকোচুরি , এধরনের কতো রকম সুন্দর সুন্দর খেলা ছিলো এতে আরো মনোযোগ বাড়ে পড়াশোনাতে ,স্পুন রেস মুখে নিয়ে তারপর সংখ্যা যোগ বিয়োগ করা । এধরনের খেলাধুলা এখন সব অবলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে যেন । ক্রিকেট , ফুটবল , টেনিস , হকি খেলা এগুলো সব বোধহয় অবলুপ্ত হয়ে যাবে । বাচ্চারা এভাবে এধরনের খেলাধুলা থেকে সরে যাচ্ছে । তাই আমাদের কে দেখাশোনা করে শরীর সচেতন করাতে হবে বাচ্চাদের । এখন তো পড়াশোনার চেয়ে বেশি কম্পিউটার বা মোবাইল নিয়ে ভিডিও গেম খেলাতে আসক্ত। এজন্য বাচ্চাদের কোনও দিনই পড়াশোনা তে মন বসে না । কি যে করা যায় ? বাচ্চাদের দেখাশোনা করার জন্য বড়রা তো নাজেহাল হয়ে যায়। তবুও বাচ্চাদের মন ভরে না । আমরা হয়রান হয়ে যাই এদের নিয়ে । এখন শুধুই একটাই কথা মনে পড়ছে ইঙ্গলিশে ” All work & no play makes jack a dull boy ” । এখন বাচ্চারা যদি কোনও কাজ বা কোনও খেলাধুলা না করে তাহলে তো আরো তাদের পড়াশোনার প্রতি আকর্ষণ কমে যাবে । তাই সবসময় মনে করছি বাচ্চাদের কিছু টা সময় দিয়ে তাদের কিছু যোগা করানো হোক যাতে তাদের পড়াশোনা তে মন বসে ও স্ট্রেস কমে । স্ট্রেস শরীরের সেন্ট্রাল নার্ভাল সিস্টেম কে দুর্বল করে ও মনের ওপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে দেয়।
শারীরিক কার্যকলাপ শরীর ভালো রাখে, মন ও ভালো রাখে। গবেষকরা জানান , ” পড়াশোনা , পরীক্ষা , মানসিক চাপ তাদের পড়াশোনা নিয়ে যেন বড়দের মাথা খারাপ হয়ে যায় এসব সামলাতে। পড়াশোনা নিয়েও তো খারাপ হয়ে যাচ্ছে মাথা বাচ্চাদের কারণ তাদের মনোযোগ কিছুতেই লাগছে না । তাই বাচ্চাদের পড়াশোনা থেকে যাতে মনোযোগ বিক্ষিপ্ত না হয় সেই জন্য বাচ্চাদের কাছে আনা হয়েছে কিছু যোগব্যায়াম যেগুলো করলে তাদের মনোযোগ ও বাড়বে। বাচ্চারা পড়াশোনা করে নিয়ে যাতে তাদের চাপ কমে সেই নিয়ে চলে এলাম কিছু যোগাসন। বাচ্চাদের শুধু পড়াশোনা নয় যাতে তাদের পারফরমেন্স লেভেল ভালো হয় আর পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হয় সেই জন্য তাদের কিছু যোগাসন করতে হবে সেটি কিছু সংক্ষেপে তুলে ধরলাম । প্রথমে হলো বজ্রাসন, সূর্য নমস্কার , পদহস্তাসন , পদ্মাসন। কি ভাবে এই আসনগুলি করতে হবে জেনে নিন? (১) বজ্রাসন– সামনে পা ছড়িয়ে দিয়ে মাটিতে বসুন । শরীরের দু পাশে হাত রাখুন। এবার প্রথমে ডান পা ও পরে বাঁ পা পেছন দিকে মুড়িয়ে কোমরের নিচে রাখুন। দুই হাঁটুতে দুই হাত রাখুন। এভাবে করে নিয়ে কিছুক্ষণ থেকে স্বাভাবিক করে নিজের জায়গাতে ফিরে আসুন ।
(২) সূর্য নমস্কার– এটি করতে গেলে দুই পা পাশাপাশি রাখুন নিয়ে তারপর দুই হাতের তালু কে জড়ো করুন নিয়ে তারপর উপরে তুলুন হাত সোজাসুজি করে। তারপর বাঁ পা তুলে ডান পায়ের থাই তে ভর করে দাঁড়ান । এর মধ্যে কয়েকটা আসন রয়েছে যেটাতে ১২ টি ভঙ্গী রয়েছে । এর মধ্যে ছটা ভঙ্গী আছে যেগুলো করলে এক ভাবে করার পর ছটা ভঙ্গী উল্টো ভাবে অর্থাত অ্যান্টিক্লকওয়াইজ ভাবে করতে হবে । আর এভাবে করে এক একটা করে আসন আসবে আরো যেমন প্রাণামাসন। প্রাণামাসন করতে করতে এক এক করে আসন আসবে যেমন হস্তত্তুনাশন, হস্তপদ্মাসন, অশ্বসঞ্চালনা , অধমুখশবাসন, অষ্টাঙ্গমকরাসন এবং ভূজাঙ্গাসন। এগুলো আবার উলটোভাবে করে করলে হবে ।
(৩) পদহস্তাসন– এটাতে নানা ভাবে শরীরের উপকার আছে এটি করলে পায়ের হাড় ও মেরুদন্ড শক্তপোক্ত হয়। দুই পা জোড় করে সোজা হয়ে দাঁড়ান। দুই হাত টান করে সোজা উপর দিকে ছড়িয়ে দিন । এবার কোমর থেকে শরীর ঝুঁকিয়ে হাঁটু না ভেঙে পায়ের পাতা ছুঁতে হবে । দুই হাতের পাতা পুরোপুরিই ভাবে মাটিতে রাখতে হবে আর মাথা হাঁটু স্পর্শ করে থাকতে হবে। তারপর আস্তে করে নিজের জায়গাতে ফিরে আসুন ।
(৪) পদ্মাসন– এটা করলে সব পড়ুয়াদের মন শান্ত হয় আর মনসংযোগ এর ক্ষমতা কে বাড়িয়ে তোলে । মাটিতে বসে ডান পা ভাঁজ করে বাঁ থাইয়ের উপর রাখুন এবং বাঁ পা ভাঁজ করে ডান থাইয়ের উপর রাখুন। পা এমন ভাবে রাখুন, যাতে বাঁ তলপেটে ডান গোড়ালি ছুঁয়ে থাকে এবং ডান তলপেটে বাঁ গোড়ালি ছুঁয়ে থাকে।
রোজ এই কিছু আসন আছে যেগুলো করলে বাচ্চাদের মনোযোগ বাড়বে পড়াশোনাতে আর মোবাইল বা কম্পিউটার এ ভিডিও গেম খেলা থেকে আসক্তি কমবে । শুধু তাই নয় এই আসন গুলো করলে তাদের আসক্তি বাড়বে এই শরীরের ফিটনেস ওয়ার্কআউট করার জন্য। এতেই বাচ্চারা আসক্ত হবে বেশি এই ফিটনেস এর ওপর তাই এটা সবসময়ই করানো উচিত । এখন তো একটা সাবজেক্ট ও বাড়ানো উচিত স্কুল, কলেজে যোগাসন নিয়ে তবে তাহলেই তাদের পড়াশোনা ও ভালো হবে মনোযোগ বাড়বে আরো আর আগের বিভিন্ন সব খেলাধুলা যা সব ছিল আগে সবকিছুকে ফিরিয়ে আনা হোক। এভাবে খেলাধুলা কে এগিয়ে আনা হোক এটাই বলা হবে বাচ্চাদের কে । যাতে তাদের জীবনের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের রাস্তা মসৃণ হতে পারে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply