October 7, 2024, 3:23 pm

তথ্য ও সংবাদ শিরোনামঃ
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ভালুকায় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে ৪টি দোকানঘর পুড়ে ছাঁই বনানীর স্টার কাবাবে কাচ্চি বিরিয়ানির সাথে পচা ও গন্ধ টিক্কা দেওয়ায়র প্রতিবাদে হামলার মামলায় ১১জন গ্রেফতা। সাংবাদিক আমিরুল মোমিনিন মানিক এর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত সারা বিশ্বকে একের পর এক চ্যালেঞ্জএবারে মাটিতে নয়, হাওয়ায় দৌড়াবে ট্রেন ভারতে দেশের দুই শেয়ার বাজারে বড় পতন, বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ। ভালুকায় শ্বাসরোধ করে মেয়েকে হত্যা; মা আটক ভালুকায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় চার্জ দিতে গিয়ে চালকের মৃত্যু সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ সরকার সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডাঃ একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে ভাসানী অনুসারী পরিষদের শোক প্রকাশ ১৮৮ শতাংশ জমি দখল করে ৬৯ বছরের বৃদ্ধকে জেলে পাঠাল বিএনপি নেতা আহমেদ আযম খান, জমি ফেরত ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন হার্ট অ্যাটাকের ভয় পাবেন না ! বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা, আটক ৫ লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল এর কবিতা শিক্ষকের কণ্ঠস্বর: শিক্ষায় একটি নতুন সামাজিক অঙ্গীকার” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বিটিএ ও বাকবিশিস’র যৌথ উদ্যোগে ৫ অক্টোবর-২০২৪ ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ পালন। ঢাকার যানজট নিরসনে ইছহাক দুলালের ১১ দফা প্রস্তাবনা পেশ ইতিহাসখ্যাত বহু পরিবারের শেষ কোথায়? অনেকেই জানেন না সিরাজদৌল্লার শেষ বংশধর কোথায়? শত কোটি টাকার মালিক ছালাহউদ্দিন পূর্বাচলজুড়ে দরবেশ আতঙ্ক। সন্ত্রাস চাঁদাবাজ ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জে যুবদলের সমাবেশ। নিত্য পণ্যের দামের চলছে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা, কমার কোনো লক্ষণ নেই, মারাত্মক নাজেহাল অবস্থায় সাধারণ মানুষ। সেপ্টেম্বর মাসে ২৮ জনকে পিটিয়ে হত্যা ধর্ষণ ৪৪ জন। বেনাপোল সীমান্তের চিহ্নিত মাদক সম্রাট বাদশা মল্লিক আটক। ভালুকায় ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতা হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৬৬৬ কোটি টাকা কর দিতে হবেনা, হাইকোর্টে এনবিআর এর মামলা প্রত্যাহার। খুব শীঘ্রই স্থবির হয়ে যাচ্ছে দেশ, দুর্ভিক্ষ আসন্ন, ব্যাংক ঋণের সুদের হার ১৪%, অনিয়ন্ত্রিত ডলারের দাম, গ্যাস-বিদ্যুতের বিল দ্বিগুণ। কক্সবাজারে উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি নিহত ১ এবং আহত ৫ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভারতে কম মূল্যে রফতানি হচ্ছে ইলিশ দোহাই দিচ্ছে পুরনো পরিপত্রের সংশ্লিষ্টরা। গুমের শিকার শামীম চাকুরী হারিয়ে এখন পথে পথে

সবার উপরে মায়ের আঁচল তাহার উপরে নাই

সবার উপরে মায়ের আঁচল তাহার উপরে নাই

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়: তখন আমি খুবই ছোট। হামাগুড়ি পর্ব শেষ করে হাঁটতে শুরু করেছি। হোঁচট খেতেই মা কোলে তুলে আঁচল দিয়ে চোট লাগা জায়গাটি মুছে দিতেন। যাতে ধুলো, বালি না থাকে। মা জোর কোরে দুধ,ভাত বা অন্যা খাবার মুখে তুলে দিতেন। খাবার মুখ থেকে গড়িয়ে পড়লে আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন। আরো কত কি!!!

আজকাল মায়েদের আঁচল কোথায়? সালোয়ার কামিজ, জিন্সের প্যান্ট , বেলবটস আজ অতীতের সেই মায়ের মুখকে কেড়ে নিয়েছে। আঁচলে মায়ের মধ্যে যে হাসিটি ফুটে উঠতো,সেটি তো আজ ইতিহাস হয়ে পড়েছে। আঁচল কী তা আজকের বাচ্চারা জানে না , কারণ আজকাল মায়েরা আর শাড়ি পরে না। আঁচল অতীতের জিনিস।আঁচলের কথা মনে এলেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেই মা যেতেন আমি তার আঁচল ধরেই যেতাম। আচার অনুষ্ঠান, পুজা মন্ডপ, বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও।আঁচল মানেই মাতৃত্বের প্রকাশ। আগে মায়ের আঁচল ছিল বহুমুখী। সেই আঁচলে ” একই অঙ্গে এতো রূপ, দেখিনা এখন”। তখন কতো কাজে লাগতো মায়ের এই আঁচল। উনুন থেকে গরম কোন পাত্র নামানোর সময় মা আঁচলটি ব্যবহার করতেন। কোন গরম প্যান,কেটলি ধরতেও আঁচলের খুব ব্যবহার হতো।আঁচল ছিল এক অনন্য বস্তু । আঁচলের মহিমার উপরে লিখতে গেলে বোধ হয় একটা ছোটখাট বই লেখা হয়ে যাবে। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অতীতের অনেক শিশুর সুখ স্মৃতি।

মা আমার রোদে পোড়া মুখের,শরীরের ঘাম পুছে দিতেন। স্কুলের ক্লাস ছুটি না হওয়া পর্যন্ত মা স্কুলের কাছে কোন বাড়ির রোয়াকে অন্যান্য মায়েদের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করতেন স্কুলের ঘণ্টা বাজা পর্যন্ত। আমি বেরিয়ে আসতেই মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতে, নাকের সর্দি মুছতে, নোংরা কান, মুখ পরিষ্কার করে দিতেন। তারপর বাড়ি থেকে আনা খাবারটি টিফিন বক্স থেকে বের করে খাইয়ে দিতেন। জল খাইয়ে দেবার পর আবার আঁচল দিয়ে মুখ মুছে দিতেন। ঠিক যেন একটা তোয়ালে। আঁচলকে তোয়ালে হিসাবে ব্যবহার করতেন। খাবার খেয়ে মায়ের আঁচলে মুখটা পরিষ্কার করিয়ে নেওয়াও ছিল আমাদের কাছে একটি খুশীর বিষয়।

কখনও কখনও, চোখের ব্যথার ক্ষেত্রে মা তার আঁচলকে গোল করে পাকিয়ে তাতে ফুঁ দিয়ে দিয়ে গরম করে চোখের উপর রাখতেন, সমস্ত ব্যথা তখন অদৃশ্য হয়ে যেত । মায়ের কোলে ঘুমন্ত বাচ্চার জন্য কোলটি গদি এবং মায়ের আঁচল শরীরকে ঢাকার চাদর হিসাবে কাজ করত।

যখন খুব ছোট ছিলাম তখন কোনও অচেনা লোক বাড়ীতে আসত, আমি মায়ের আঁচলের একটি আড়াল নিয়ে তাকে দেখতাম। যখনই কোনও বিষয়ে লজ্জা বোধ করতাম, তখন ঐ আঁচল দিয়ে মুখটি ঢেকে রাখতাম এবং আঁচলের ভেতর লুকিয়ে পড়তাম।

শুধু আমি কেন,সকল শিশুরাই এমনটি করতো। যখন বাচ্চারা মায়ের সাথে বাইরে যেত, তখন মায়ের আঁচল পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করত । যতক্ষণ শিশুটির হাত আঁচল ধরে থাকত পুরো জগৎ তার মুঠোয় থাকত । শীতকালে প্রচন্ড কনকনে ঠান্ডায় মা তার আঁচল দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখতেন,যাতে কোনমতেই যেন ঠান্ডা লাগতে না পারে। পাড়ায় কোন রাতের অনুষ্ঠান হলে মায়ের সঙ্গে যেতাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম জানি না। মা সহত্নে আঁচল দিয়ে ঢেকে কোলে শুইয়ে দিতেন।গ্রাম গঞ্জে গাছ থেকে পড়া আম, জাম, খেজুর এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুল কুড়িয়ে আনতেও ব্যবহৃত হত মায়ের এই আঁচল। সরস্বতী পূজার সময় খুব সকালে মাকে দেখেছি ঘাসের উপর ঝরে পড়া শিউলী ফুল অত্যন্ত সন্তর্পণে আঁচলে তুলে নিতে। আমাদের বাড়ির বারান্দার বাইরেই ছিল মস্তবড় দুটি শিউলী ফুলের গাছ। বাড়িতে প্রবেশের মুখে গেটের দুপাশেই লাগানো হয়েছিল গাছ দুটি। গেট খুলে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ফুলের বাগান। নুড়ি পাথরের ছোট্ট রাস্তা চলে গেছে বাড়ির সিড়ি পর্যন্ত। সিঁড়ির দুপাশে দুটো মস্তবড় গ্লান্ডিফ্লোরা গাছ।এই দুটি গাছের ডাল বাবা এনেছিলেন এক চা বাগানের ম্যানেজারের বাড়ি থেকে। কী সুন্দর ফুল হতো। সাদা বিশাল পাপড়ি মেলে ফুটে উঠতো ফুল। মা শিউলী ফুল কুড়িয়ে এনে ঠাকুর ঘরে নিয়ে আসতেন। তার আগে মা সরস্বতীর আসন টি নিজের আঁচল দিয়েই পরিপাটি করে পুছে নিয়ে মূর্তিটি বসিয়ে ফুলের গোছা একটি তামার পাত্রে ঢেলে দিতেন। তারপর সেই শিউলী ফুলের মালা গেঁথে রাখতেন মা। মায়ের আঁচলের গিঁটে বাধা থাকতো বাড়ির এক গোছা চাবি। আবার আঁচলেই ছিল মায়ের চলতি ফিরতি একটা ব্যাংক। কাউকে কিছু দিতে,কিছু কিনে আনতে মা ব্যাংকের গিঁট খুলে টাকা,পয়সা দিতেন। অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলেও মায়ের এই আঁচলে ঘরের চাবি ও চলতি ফিরতি ব্যাংক থাকতো। মা ঠোঁট লাল করে পান খেয়ে অনুষ্ঠান বাড়ির কাজের মাসিকে এই ব্যাংক থেকে বকশিস দেবার সময় ছোট্ট আমি মায়ের নির্দেশে এই আঁচলের ব্যাংকের তালা খুলে দিতাম। মা গুনে গুনে টাকা বের করতেন। আজকের দিনের মায়েদের অবশ্য সেই দিন গুলো নেই। তারা সহজেই গর্ব বোধ করে জিন্সের প্যান্ট থেকে টাকা বের করতে পারেন।কথায় কথায় একটা কাগজের টুকরো চেকে সই করে টাকা দিয়ে থাকেন আজকের মায়েরা।আজকাল শুধু জিন্সের প্যান্টই নয়, মায়েরা পুরুষদের মতো ছোট চুল রাখছেন। শার্ট, হাফ প্যান্টও পড়ছেন। মায়ের আঁচল এক মায়াবী অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পুরানো প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত এবং সর্বদা আমার মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহ অনুভব করি, যা আজকের প্রজন্মের সম্ভবত বোঝার বাইরে ।বাবার সেই ধুতি কোথায়???

আজকাল বাবাদের ধুতি পড়তে দেখাই যায় না। অনেকের বাবাকেও দেখছি আগের দিনের মায়ের মতো লম্বা চুল রাখতে। অনেক বাবাকে দেখা যাচ্ছে কানে দুল এবং হাতে বালা পড়তে। শুধু কোন পূজা ও উৎসব উপলক্ষ্যে অথবা বিয়ে বাড়িতে সেই পুরোনো ঐতিহ্যমূলক কোঁচা দেয়া ধুতি পড়তে দেখা যায় বাবাদের। আর মায়েরা লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে পুজা মণ্ডপ ও বিয়ে বাড়িতে গিয়ে থাকেন। অতীতের মায়েদের বিপরীতে এখানকার মায়েরা পুরুষের মতো ছোট চুল রাখছেন। সিঁথিতে নেই সিঁদুরের চিহ্ন। এ এক অদ্ভুত আজগুবি জীবন।

ছোট শিশুকে আজ আর মায়েরা আঁচল দিয়ে ঘিরে রাখেনা। নিজেরা দেখাশোনা না করে অনেকেই আয়ার হাতে ছেড়ে চলে যান। ফলে এই শিশুদের মনে মায়ের প্রতি তেমন অনুভূতিও জাগে না।আগে মায়েরা আচার অনুষ্ঠান,উৎসবে গেলে অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিতেন, হাসি মস্করা করতেন। আজকের মায়েদের সেই সময় কোথায়!! হাতে সর্বক্ষণ চলছে মোবাইলে টিকটিক করা। হিয়ারিং এইড কানে দিয়ে কী যে বিড়বিড় করে চলেন,আবার হাসতে থাকেন তাতে অনভিজ্ঞ মানুষ পাগল বলেও ভাবতে পারেন। মায়ের আঁচলের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে সেদিনের মায়ের চাঁদের আলোয় মিষ্টি হাসিও। এটা ভেবেই বুঝি বিখ্যাত কিংবদন্তি গায়ক অখিল বন্ধু গেয়েছিলেন, ” মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে পড়ে, মাকে মনে পড়ে আমার মাকে মনে পড়ে”।

আমাদের প্রকাশিত তথ্য ও সংবাদ আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)

Design by Raytahost.com