ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: বিশ্বযুদ্ধে একসময় জর্জরিত ছোট্ট একটি দেশ জাপান আজ বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশ। প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এমন দক্ষতা খুব কম দেশই দেখাতে পেরেছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তিবিদ্যার উপযুক্ত ব্যবহারের ফলে একের পর এক নতুন নতুন আবিষ্কার চলেছে জাপানে। অতীতে মনোরেল আবিষ্কার বিস্ময়ের সৃষ্টি করলেও পরবর্তী কালে আরো বিস্ময়কর সৃষ্টি জাপানকে বিশ্বের উন্নত দেশগুলির তালিকা ভুক্ত করে দিয়েছে। জাপান সরকার জনগণের স্বার্থে সমুদ্রের নিচে একটি শহর গড়তে চলেছে। সেই ভাসমান শহরে থাকবে বসবাসযোগ্য ঘর। প্রয়োজনীয় রসদ। উল্লেখ্য ,জাপান আয়তনে ছোট বলে অতিরিক্ত জনগণের স্বার্থে আকাশে,সমুদ্রের নিচে আবাস গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।বিভিন্ন দেশ যখন গণতন্ত্র, জনগণের কথা বলে গলা চড়িয়ে,তখন জাপান বিনা প্রচারে একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি ছাত্রীর জন্য একটি ট্রেন চালু রেখেছে। পুরো ট্রেনে কোন যাত্রী থাকেনা। শুধুমাত্র সেই ছাত্রীটির জন্যই জাপান সরকার একটি ট্রেন চালু রেখেছে।
জাপানের একটি জনহীন রেলওয়ে স্টেশন শুধুমাত্র এক ছাত্রীর জন্য এখনও চালু রয়েছে। যাতে সে ঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছতে পারে।সারা দিনে ওই একটি ট্রেন তাঁকে স্কুলে পৌঁছে দেয় এবং বিকেলে তাঁকে ফের ওই জনহীন স্টেশনে নামিয়ে দিয়ে যায়।
হ্যাঁ এটাই নিহোন (জাপান)।
জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপের একদম উত্তর প্রান্তে রয়েছে কামি শিরাতাকি স্টেশন। নিতান্তই অজ পাড়া-গাঁ বলতে যা বোঝায় অনেকটা তাই। যাতায়াতের জন্য অন্যান্য মাধ্যম থাকায় রেলপথে কেউই খুব একটা কোথাও যাওয়া-আসা করেন না। এ কারণেই রেল দপ্তর ওই স্টেশনটি বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। কিন্তু পরিদর্শকরা তখন লক্ষ করেন, একটি মেয়ে সারা বছর ট্রেন ধরে স্কুলে যাতায়াত করে। ট্রেন না চললে তাঁর স্কুলে পৌঁছতে খুবই কষ্ট হবে। তাই ওই ছাত্রীর জন্যই একটি গোটা স্টেশন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শুধু তাই নয়, মেয়েটি যাতে সঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছতে পারে তার জন্য ট্রেনের টাইমও পাল্টে দেওয়া হয়। সারা দিনে ওই একটি ট্রেন তাঁকে স্কুলে পৌঁছে দেয় এবং বিকেলে তাঁকে ফের ওই জনহীন স্টেশনে নামিয়ে দিয়ে যায়। রেল দপ্তর এমনটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, যত দিন না মেয়েটি স্নাতক হচ্ছে, তত দিন এই ট্রেন পরিষেবা চালু রাখা হবে। এটাকে কি আমরা প্রকৃতার্থে বিশ্বের নবম আশ্চর্যের অন্যতম আশ্চর্য বলতে পারিনা?
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply