মোহাম্মদ আহসান হাবীব এর একটি গবেষণামূলক বিশ্লেষণ।
সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়কে কেন্দ্র করে বিগত বেশ কিছুদিন সমগ্র দেশ ও জাতি একটি বীভৎস গ্রহণের কাল অতিক্রম করেছে। যার প্রেক্ষিতে দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি আমরা উপলব্ধি করছি। কোটার বিষয়কে কেন্দ্রকরে আমাদের রাষ্ট্রীয় বেশকিছু সম্পদ ও স্থাপনার মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। আর্থিক ক্ষতির পরিমান দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০ হাজার কোটি টাকা। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে অনেক। উন্নয়নশীল বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে এইযে হোঁচট খাওয়া, এর ধকল কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে অনেকদিন। এছাড়াও কোটাকে কেন্দ্রকরে যে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ হয়েছে তার ফলে সারা দেশে অকালে প্রাণ হারাতে হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক লোকের। যাহা কখনোই পূরণীয়নয়। এখনো হাসপাতালের বেডে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে হাজার হাজার লোক। এই দায় কার?
আমি কয়েকবছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও আমাদের সংবাদ সংস্থার মাধ্যমে দেশের একটি ভয়াবহ চিত্রের বিষয়ে লিখেছিলাম। বলেছিলাম প্রাণঘাতী মাদক ইয়াবার বিষয়ে। সেদিন আমার লিখায় তুলে ধরেছিলাম প্রাণঘাতী ইয়াবার ভয়াবহ কুফলের বিষয়ে। বলেছিলাম, সেদিন আর বেশি দূরে নয় এদেশের রাস্তায় অলিতে গলিতে কোমলমতি তরুণ তরুণীরা মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসবে। বলেছিলাম আমাদের তরুণ সমাজ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বিষন্নতায় হতাশায় ভুগবে। তারই একটি ভয়াবহ রূপ আমরা দেশখেছি বাংলাদেশে কোটার বিষয় নিয়ে আন্দোলনের সহিংসতায়।
সম্প্রতি কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্রকরে রাস্তায় আন্দোলনরত যেসকল শিক্ষার্থীদের দেখা গেগিয়েছে তাদের আচার আচরণ ও মানসিক অবস্থা যদি নিখুঁত ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় তাহলে দেখা যাবে আন্দোলনরত প্রতিটি তরুণ তরুণীই মরণঘাতী ইয়াবায় আসক্ত। নিয়মিত ইয়াবা সেবনের কারণে একজন লোকের মাঝে যে সকল উপসর্গ সৃষ্টি হয় তাহার পুরোটাই ছিল রাস্তায় আন্দোলনরত ওইসকল তরুণ তরুণীদের মধ্যে।
নিয়মিত ইয়াবা সেবনের ফলে যে সকল মারাত্মক মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয় তার মধ্যে অন্যতম হলঃ
মানসিক বিকারগ্রস্থতা।
হ্যালুসিলেশন ও সিজোফ্রেনিয়া।
বিষন্নতা ও হতাশা।
একাকিত্ব।
আত্মহত্যার প্রবণতা।
মেজাজ খিটখিটে হওয়া।
এছাড়াও একঘেয়েমি। নিজে যাহা ভাবছে বা চিন্তা করছে তাহাই সঠিক, অন্যরা সবাই বেঠিক। দুঃসাহসিকতা বুঝানোর চেষ্টা। নিজের অলীক চিন্তা ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া চেষ্টা। নিজেকে অনেক বড় কিছু মনেকরা। মৃত্যুর কথা জেনেও তাহাকে পরোয়া নাকরা। যাহা সম্প্রতি কোটা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত প্রত্যেক তরুণ তরুণীর মধ্যে বিদ্যমানছিল।
এছাড়াও নিয়মিত ইয়াবা সেবন করলে মস্তিষ্কে রক্ত ক্ষরন, নিদ্রাহীনতা, খিঁচুনি, ক্ষুধামন্দা এবং মস্তিষ্ক বিকৃতি দেখা যায়। ইয়াবা গ্রহণের ফলে ফুসফুস, বৃক্ক সমস্যা ছাড়াও অনিয়মিত এবং দ্রুতগতির হৃৎস্পন্দনের মতো সমস্যাও সৃষ্টি হয়।
ইয়াবা সেবনের ফলে মানব দেহে দীর্ঘ মেয়াদি যে সকল শারীরিক সমস্যা সমস্যার সৃষ্টি হয় তার মধ্যে অন্যতম হলঃ
মস্তিষ্কের সমস্যা।
যৌন সমস্যা।
স্মৃতিশক্তি নষ্ট।
ঘুমের সমস্যা।
কিডনি ও লিভারের সমস্যা।
রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া ও মাথা ব্যাথা।
দৃষ্টিশক্তি হ্রাস।
উইথড্রল ইফেক্ট।
সুতরাং দেশ ও জাতির বৃহৎ স্বার্থে সরকারের দায়িত্বশীল কর্তা ব্যক্তিদের নিকট আহ্বান করছি, অতি দ্রুত মরণঘাতী ইয়াবার প্রাদুর্ভাব থেকে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম যুব সমাজকে রক্ষা করতে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় যাহা ঘটে গেছে, তাহার চেয়েও বড় কোনো অস্থিতিশীল মারাত্মক পরিস্থিতি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply