সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন হাইকোর্ট। এই কমিটিকে চার মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীকে। তার সঙ্গে থাকবেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জসিম উদ্দীন সরকার ও প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন।
বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচলে মোট ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে জারি করা রিট আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
গত ১০ সেপ্টেম্বর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত অবৈধ বরাদ্দ প্রত্যাহার এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন অনুযায়ী বরাদ্দ থেকে সুবিধাপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। একইসঙ্গে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হাইকোর্টের একজন সাবেক বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের আবেদন করেন।
অভিযোগ উঠেছে রাজউকের (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) আলোচিত পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে স্বয়ং নিজের নামে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু তিনি একা নন, প্লট নিয়েছেন তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ (জয়) ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। এ ছাড়া প্লট বরাদ্দ প্রাপ্তদের তালিকায় আছেন শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার দুই সন্তান।
জানা যায়, রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারের ১৩/এ ধারার ক্ষমতাবলে তাদের প্লট দেওয়া হয়। ২০২২ সালে তারা প্লট বুঝে পান। পরে বিষয়টি রাষ্ট্রীয় অতি গোপনীয় বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ফলে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া খোদ রাজউকেরই অনেকে এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না। হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ১০ কাঠা আয়তনের প্লট নিয়েছেন।
এদিকে হাসিনার পতনের পর এ সংক্রান্ত প্লট বরাদ্দের ফাইল রাজউকের রেকর্ড শাখা থেকে সরিয়ে অন্যত্র লুকিয়ে ফেলা হয়। পরে চেয়ারম্যানের ড্রয়ারে ফাইল রয়েছে এমন খবরে রাজউকে ক্ষোভ-অসন্তোষ দেখা দেয়। সম্প্রতি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবির মুখে এ সংক্রান্ত ৬টি ফাইল পুনরায় রেকর্ডরুমে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে চুরি বা নথি হারানোর শঙ্কায় সবকটি ফাইল বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply