এ.আর. ইমরান, করোনা মহামারিতে গোটা বিশ্ব এখনো স্তব্ধ । থেমে গেছে সাধারণ গতি। ভেঙে গেছে বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা। বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও নেমে এসেছে মহাবিপর্যয়। গত ৮ই মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। আজকে পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯৮৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৫২৭২ জন। এই অবস্থায় বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও নেমে এসেছে এক অজানা আতঙ্ক । বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা অধিকাংশই ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী। যেমন কাপড়ের দোকান, লেপ তোষকের দোকান, মিষ্টির দোকান, টিন, চা, কসমেটিকস, হোটেল, স্বর্ণের দোকান, ফার্নিচার, কাঠের ব্যবসা, জুতার দোকান- ইত্যাদি।
দীর্ঘ করোনা কালীন সময়ে কঠিন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে মাঝারি ব্যবসায়ীরা যা এখনো অব্যাহত আছে। তাদের ব্যবসার পরিধি খুব বেশি একটা বড় না হলেও তারা বিভিন্ন সোর্স থেকে টাকা সংগ্রহ করে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। যেমন ব্যাংক লোন, এনজিওর লোন, দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উচ্চ সুদে টাকা অথবা নিকটাত্মীয় থেকে টাকা সংগ্রহ করে তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে থাকেন । তাছাড়াও হোলসেল মার্কেট থেকেও বাকিতে মালামাল সংগ্রহ করে থাকেন।
২৬ শে মার্চ থেকে টানা প্রায় ৩ মাস সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে তারা মারাত্মকভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। পরবর্তীতে খোলে দিলেও মন্দা অবস্থা কাটেনি এবং এখন পর্যন্ত বেচা-বিক্রি নাই বললেই চলে। মাঝারি ব্যাবসায়ীদের এই চরম বিপর্যয়ের মধ্যে সরকারের নির্দেশ উপেক্ষা করে এনজিও এবং ব্যাংক গুলো প্রতিনিয়ত কিস্তি আদায় অব্যাহত রেখেছিলো অনেক আগে থেকেই । কোন কোন ক্ষেত্রে কিস্তির সমূদয় টাকা পরিশোধ করার পরেও এনজিও গুলো নতুন করে ঋণ দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে । প্রণোদনার টাকা তো দূরের কথা ব্যাংক গুলো নতুন করে কোন ঋণ দিতেই চাচ্ছেনা। তবে বড় ব্যবসায়ী/গ্রাহকেরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রণোদনার সুবিধাটা পেয়েছেন।
করোনাকালীন বিগত ৬ মাসে মাঝারি ব্যাবসায়ীরা যতটুকু আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কেবল মাত্র তারাই নিষ্ঠুর বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারছেন। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০শতাংশই মধ্যবিত্ত এবং এদের হাতেই পরিচালিত হচ্ছে মাঝারি শিল্প বা ব্যবসা তারা যদি আর্থিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে না পারে তাহলে দেশের ঘোটা অর্থনীতিতেই বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
দেশের এই সংকটময় করুণা কালীন পরিস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দয়াকরে মাঝারি শিল্প এবং ব্যবসায়ীদের বাঁচান, পুরাতন ঋণের কয়েকমাসের সুদ কমালেই তাদের সমস্যার সমাধান হবে না বরং নতুন করে স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply