প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য আর উর্বর ভূমির কারণে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে বাংলাদেশ ছিল একটি স্বপ্নের ভূখন্ড। আজ সেই বাংলাদেশ বিশ্বে অবহেলিত।
বাংলাদেশে জনবসতি গড়ে উঠেছিল চার হাজার বছর পূর্বে। আর দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম সম্রাজ্য এই বাংলাদেশেই গড়ে উঠেছিল।
মুঘল, আর্য, মোর্য যারাই এখানে এসেছে সবাই এ ভূখন্ডের ধনসম্পদ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে।
অতীতে ইংরেজদের আগমনের পূর্বে ইউরোপ থেকে ভারতবর্ষের টাকার মান বেশি ছিল। উদাহরণস্বরূপ, মাত্র ত্রিশ হাজার পাউন্ড নিয়ে গঠিত হয়েছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। তৎকালীন মুদ্রা মান অনুযায়ী ত্রিশ হাজার পাউন্ড ছিল পঁচিশ হাজার রুপির কম।
বর্তমান টাকার মান কত ?
ভারতবর্ষ ছিল মুঘলদের অধীনে,সে সময় কৃষক ধনী সবার কাছে স্বর্ন অলংকার ভরপুর থাকতো আরো অনেক দামী দামী সম্পদ।
এ সব ধনসম্পদ অত্যাচারের মাধ্যমে লুন্ঠন করেছে তৎকালীন ইংরেজরা। তারা প্রায় দুইশত বছর শাসন করে এ ভূখন্ড। সব ধ্বংস করে দিয়েছিল ইংরেজরা। বাংলাদেশের ধনসম্পদ লুন্ঠন করাই ছিল তাদের কাজ। ইংরেজ রাজত্বের আগে এ ভূখন্ড সবসময় স্বাধীন ছিল।
বাংলাদেশ সবসময় স্বাধীন সম্রাজ্য ছিল আর ভাষাগত দিক ও ছিল স্বাধীন। ইংরেজ আগমনের পূর্বে বাংলাদেশ ভূখন্ড ছিল বিশাল। বাংলা বিহার উড়িষ্যা পশ্চিমবঙ্গ কলকাতা নিয়ে বাংলা ছিল বিশাল। যার আয়তন ছিল চার লক্ষ সাইত্রিশ হাজার সাত শত আট ( ৪৩৭৭০৮) বঃকিঃ
বাংলাদেশ আয়তনে এত বড় থাকার কারনে, তৎকালীন বৃটিশ সরকারের এ ভূখন্ড পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
সে সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা এত ভালো না থাকার কারনে বাংলা ভূখন্ডের বিভিন্ন যায়গায় মহামারি সংক্রান্ত হলে খাদ্যদ্রব্য চিকিৎসা সেবা দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। সে কারনে ১৯০৫ সালের ১৬’ই অক্টোবর ভারতের ভাইসরয় লর্ড কার্জনের আদেশে বঙ্গভঙ্গ সম্পন্ন হয়।
এ সময় পশ্চিমবঙ্গ ছিল হিন্দু ধর্মের লোকজন সংখ্যায় বেশি। অপরদিকে পূর্ববাংলায় ছিল মুসলমানদের সংখ্যা বেশি। আর বিহার উড়িষ্যাকে বঙ্গ থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাজ্য গঠন করা হয়।
বঙ্গভঙ্গের সুত্রপাত এখান থেকে।
আবার দ্বিতীয় বার বঙ্গভঙ্গ হয় ১৯৪৭ সালে আর পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানে আর পশ্চিমবঙ্গ ভারতের ভিতর দেয়া হয়।
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হয় আর ভারতবর্ষ ধর্মের ভিত্তিতে দুটি পৃথক রাস্ট্রে পরিনত হয়। শুধুমাত্র সাম্প্রদায়িক মনোভাবের কারনে এত বড় ভূখণ্ড বাংলা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়।
পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসেছি কিন্তু বাংলার উর্বর ভূখন্ড আমরা ফিরিয়ে আনতে পারলামনা আফসোস!
যে জাতি ভাষার জন্য যুদ্ধ করলো আবার পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে আসতে লক্ষ লক্ষ মানুষ রক্ত দিল সে জাতি তার ভূখণ্ড ফিরিয়ে আনতে কিছুই করলোনা।
একই জাতির একই ভাষাভাষীর ভূখণ্ডকে আলাদা করে রাখার কৌশল হল সে জাতিকে মর্যাদাহীন করা আর দাবিয়ে রাখার ফন্দি।
আজ বাঙ্গালী জাতি বিশ্বে অবহেলিত শুধুমাত্র ভূখণ্ড ভাগ করার জন্য। ভূখন্ড আলাদা না হলে বাঙ্গালি জাতি হত বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। বিশ্বে এ জাতির মাথা থাকতো উঁচু।
বাঙালী বীরের জাতি ভূখন্ড কেউ না কেউ ফিরিয়ে আনবে আর বাঙালি জাতি আবার বিশ্বে মাথা উচু করে দাড়াবে আর বিশ্বের দরবারে এ জাতি হবে উন্নত।
জায়েদ আহমদ, সাংবাদিক ও কলামিস্ট :
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply