আল্লাহ রাব্বুল আলআমিন যখন ফেরেস্তাদের সামনে ঘোষণা করলেন। “পৃথিবীতে আমি প্রতিনিধি বানাতে চাই। (সূরা বাকারা আয়াত- ৩০)”
তখন প্রকৃতপক্ষে সেটা শুধু একজন পুরুষ (বা হযরত আদম আঃ) কে সৃষ্টি করার ঘোষণা ছিলো না, বরং নর ও নারী সম্মিলিতরূপে যে ‘মানব’ সেই মানব সৃষ্টির ঘোষণা ছিলো।
অর্থাৎ সেটা হযরত আদম ও হযরত হাওয়া উভয়ের সৃষ্টির ঘোষণা ছিলো। কারণ পৃথিবীতে মানবজাতির বিস্তার ও খেলাফত শুধু পুরুষ দ্বারা সম্ভব ছিলো না। হযরত আদমের প্রতিনিধিত্বে হযরত হাওয়ার ভূমিকা ছিলো অনিবার্য ও অপরিহার্য।
হযরত আদম (আঃ)কে যখন সৃষ্টি করা হলো, তখন নিজের মধ্যে তিনি একটি শূন্যতা, একটি অভাব এবং অশান্তি অনুভব করছিলেন। তিনি যখন ঘুম আসলেন তখন তাঁর বামপার্শ্বের অস্থির ঊর্ধ্ব-অংশ থেকে প্রথম নারী হযরত হাওয়াকে সৃষ্টি করা হলো।
কেন সৃষ্টি করা হলো? আদম যেন তাঁর সঙ্গ দ্বারা সুখ-শান্তি এবং স্বস্তি ও প্রশান্তি লাভ করেন। বস্তুত পৃথিবীর প্রথম নারী ছিলেন প্রথম পুরুষের জন্য স্রষ্টার পক্ষ হতে জান্নাতের প্রশান্তির চেয়েও মূল্যবান উপহার। কারণ জান্নাতের অফুরন্ত প্রশান্তির মাঝেও হজরত আদমের অন্তরের শূন্যতা, নিঃসঙ্গতা, অভাব ও অশান্তি দূর করতে পারেনি। একা একা জান্নাতের প্রশান্তি ভোগ করে আদমের অন্তরে শান্তি আসেনি। হযরত হাওয়াকে জীবনসঙ্গিনীরূপে পাওয়ার পরই হযরত আদমের কাছে জান্নাতের প্রশান্তি মনে হয়েছিলো। জান্নাতের প্রশান্তির মাঝে দু’জনের এই যে শান্তির সম্পর্ক, এটা শুধু ঐ দু’জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। উভয়ের সন্তানসন্তুতির ক্ষেত্রেও সমান সত্য। তাই আল্লাহ ইরশাদ করেছেন-
তিনি ঐ সত্তা যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি “শুক্র” থেকে এবং বানিয়েছেন তার থেকে তার জোড়া যেন সে তার কাছে স্বস্তি লাভ করে। (সূরা আরাফ আয়াত-১৮৯)
সুতরাং বোঝা গেলো, পৃথিবীর প্রতিটি স্ত্রী তার স্বামীর জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে একটি পবিত্র উপহার। এজন্যই আল্লাহর নামকে মাধ্যম করে এবং মোহর আদায় করে একটি জান্নাতি উপহাররূপেই নারীকে গ্রহণ করতে হয় পুরুষকে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply