আনোয়ার হোসেন, যশোর থেকেঃ বেনাপোল স্হল বন্দরে পণ্য ওঠা নামার কাজে ব্যবহৃত অধিকাংশ ক্রেন ও ফর্ক লিফট দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে পড়ে থাকায় সেটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়নি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গ্রেড বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজ। এতে ভারী পণ্য ওঠানামায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীগনের। পাশাপাশি পণ্য খালাস বাধাগ্রস্ত হওয়ায় দেখা দিয়েছে পণ্য যানজট।

দেশের বেনাপোল বন্দর স্থল পথে ভারতের সাথে যে আমদানি রফতানি বাণিজ্য হয়, তার বড় একটি অংশই দেশের শিল্পকারখানা স্থাপনের যন্ত্রাংশ, রেল-বিদ্যুৎ প্রকল্প ও সেতু-কালভার্ট নির্মাণের মালামাল। আর বেনাপোল স্হল বন্দরে ভারী পণ্য ওঠানামার কাজে ৫ বছরের চুক্তি করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গ্রেড বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারী মালামাল লোড-আনলোডের জন্য বেনাপোল বন্দরে কমপক্ষে ১৫টি নতুন ক্রেন ও ১০টি  নতুন ফর্ক লিফট প্রয়োজন। তবে ঠিকাদান প্রতিষ্ঠানটির মাত্র ৭টি পুরাতন ক্রেন ও ৮টি পুরাতন ফর্ক লিফট রয়েছে। এর মধ্যে সচল আছে মাত্র ১টি ক্রেন ও ১টি ফর্ক লিফট। আর বাকি ১৩ টিই অচল। এতে স্বাভাবিক সময়ে দিনে ৭০০ ও অধিক ট্রাক পণ্য লোড-আনলোড হলেও এখন তা ক্রমে অর্ধেকের নিচে দাঁড়িয়েছে। ফলে পণ্য খালাস কম হওয়ায় বেনাপোল বন্দরে পণ্য যানজটের পাশাপাশি দেশের শিল্পকারখানায় উৎপাদন ও উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ী গন।

ব্যবসায়ীদের দাবি, ক্রেন ও ফর্ক লিফট পুরনো হওয়ায় অধিকাংশ সময়ই নষ্ট হয়ে পড়ে থাকে। বেনাপোল স্হল বন্দরের ঠিকাদার কর্তৃপক্ষকে বারবার অভিযোগ দিলেও সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।ভোগান্তিতে পড়া একাধিক ট্রাকচালক বলেন, বন্দরের ক্রেন ও ফর্ক লিফটগুলো নষ্ট থাকায় সময় মতো পণ্য গন্তব্যে নিতে পারি না। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ক্রেন ও ফর্ক লিফট অচল থাকায় পণ্য খালাস নিতে না পারায় বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ার কথা জানিয়ে বেনাপোল ট্রাক ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়নের সেক্রেটারি আজিম উদ্দিন গাজী বলেন, বারবার অভিযোগ জানালেও কোনো প্রতিকার মিলছে না।কিন্তু সবচেয়ে বেশি রাজস্ব এই বেনাপোল বন্দর থেকে দেয়া হলেও, বন্দরের সেবার মান বেহাল দশা বলে মন্তব্য করেন তিনি।  বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দরে প্রায় ৭০০ওঅধিক ট্রাক পণ্য লোড-আনলোড হয়। এসব পণ্যের মধ্যে প্রায় ৩০০ ট্রাক ভারী পণ্য রয়েছে, যা খালাস করতে ক্রেন ও ফর্ক লিফট প্রয়োজন হয়।এ বিষয়ে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বন্দরবিষয়ক সম্পাদক মোঃ মেহেরুল্লাহ জানায়, বেনাপোল বন্দর দিয়ে বর্তমান সময়ে বিদ্যুৎ, রেল প্রকল্পের মালামাল বেশি আসছে। কিন্তু বেনাপোল বন্দরে চাহিদার তুলনায় এসব ভারী মালামাল ওঠানো ক্রেন ও ফর্ক লিফট কম। তা ছাড়া এগুলো বেশির ভাগ  নষ্ট হয়ে পড়েথাকায় বন্দরে পণ্য যানজট বেড়েছে।এদিকে অচল হয়ে পড়েথাকা ক্রেন ফর্ক লিফট সারানোর জন্য বেনাপোল বন্দরের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হলেও, কোনো প্রতিকার মিলছে না বলেও জানান তিনি। তবে নানা অজুহাত দেখিয়ে গ্রেড বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজের মেকানিক বাদশা মিয়া জানান, নষ্ট হয়ে পড়ে থাকা ক্রেন ও ফর্ক লিফট যন্ত্রাংশ জরুরিভাবে সংগ্রহ করতে না পারায় মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে পণ্য খালাসে বিঘ্ন ঘটছে। বিষয়টি জরুরিভাবে কর্তৃপক্ষ কে জানানো হয়েছে।