ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী) সভাপতি স্বপন কুমার সাহা বলেছেন, মজলুল জননেতা মওলানা ভাসানীর আদর্শকে আমরা লালন করি। তাকে অনুস্মরণ-অনুকরণ করি। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ ন্যাপ এর সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি ১২ বছর, মওলানার ভাসানীর গণমুখী অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে দেশের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। রাজাকার-আলবদরমুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে গড়ার জন্য। দেশের সংখ্যালঘু মানুষের সমান নাগরিক ও সামাজিক অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু আমার সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ ন্যাপ আজ সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী চেহারা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। এ কারণে আমি ন্যাপ থেকে পদত্যাগ করেছি। ন্যাপকে নতুন মওলানা ভাসানীর প্রকৃত আদর্শে গড়ে তোলার জন্য আবারো মাঠে নেমেছি। অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক দেশ গড়ার জন্য মওলানা ভাসানীর আদর্শ আজো প্রাসঙ্গিক।
ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী)-এর উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন ও মওলানা ভাসানীর কারাবরণ বিষয়ে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সভাপতি স্বপন কুমার সাহা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘‘ মওলানা ভাসানী ছিলেন গণমানুষের নেতা। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তানি শোষকরা তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের মানুষকে সবদিক থেকে ঠকাছে। তাই তিনি ওদেরকে আগে-ভাগেই বিদায়ী সালাম দিয়ে রেখেছিলেন সেই ১৯৫৭ সালে ৬-৮ ফেব্রুয়ারি কাগমারী সম্মেলন থেকেই। সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন। মওলানা ভাসানী সবসময়ই স্বাধীনতার চেতনার স্বপক্ষে ছিলেন। ছিলেন অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির আদর্শ পুরুষ। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের প্রবাস সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। ৫ দলীয় জোটের উপদেষ্টা পরিষদে তিনি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। এই ৫টি দল হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (মোজাফ্ফর), কমিউনিস্ট পার্টি কমরেড মনিসিংহ, অ্যাডভোকেট মনোরঞ্জন ধর (কংগ্রেস)। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যÑ বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ স্বাধীনতার চেতনা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ধারণ করে না। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর আদর্শকে তারা অনুস্মরণ করে না। তাই আমি বাংলাদেশ ন্যাপ থেকে পদত্যাগ করি। মওলানা ভাসানী ১৯৩৪ সালে লাইন প্রথা আন্দোলনে বৃটিশ শাসকের বিরুদ্ধে বলেছিলেন, ‘‘হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে শাসক এবং শোষকের বিরুদ্ধে। আমরা শোষিত মানুষের পক্ষে।’’ আমার সহকর্মীরা মওলানা ভাসানীর প্রকৃত আদর্শের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। মওলানা ভাসানীর রাজনীতি হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাজনীতি।
তিনি আরো বলেন, আমি স্বপন কুমার সাহা ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী) নামে আত্মপ্রকাশ করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। এই দায়িত্ব পালন করার জন্য সংগঠনের সকল নেতা-কর্মীরা প্রস্তুত ও ত্যাগ স্বীকারে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
সংবাদ সম্মেলন শেষে মওলানা ভাসানীর কারাবরণ দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান ও গণতান্ত্রিক জোট বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান এস এম আশিক বিল্লাহ। তিনি বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ও জাতির জনক বঙঙ্গবন্ধু ঐক্যবদ্ধভাবে পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রাজনীতি করেন। মওলানা ভাসানী ছিলেন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন রাজনীতিবিদ।
প্রধান আলোচক কাজী আরেফ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কাজী মাসুদ আহমেদ বলেন, মওলানা ভাসানী সকলের কাছে শ্রদ্ধেয়ভাজন একজন নেতা হিসেবে জাতি সর্বদায়ই তাকে স্মরণ করবে। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় নেতারা।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply