বেশ কিছুদিন আগে ‘বাংলাদেশ প্রতিদিনে’ শহীদুল্লাহ ফরাজীর একটা লেখা পড়লাম। তাতে দেখতে পেলোম রাষ্ট্রের আদর্শ, দর্শন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক বিচার ব্যবস্থাকে অতীতের ক্ষমতাসীনরা ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছে। অতীতের ক্ষমতাসীনদের সহযোগী হিসেবে দেখতে পেলাম জাসদ নামক একটি রাজনৈতিক দল তাদের ক্ষমতাসীনদের বিদায় করার পেছনে প্রধান সহযোগী ছিলেন। জনাব ফরাজী সাহেব সে ব্যাপারে কিছু বলেনি। প্রজাতন্ত্র ৫৩ বছরে সামরিক এক নায়কতন্ত্রের কারণে রাষ্ট্র ক্রমাগত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বিচ্যুত হয়েছে। তার পেছনে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কাজ করছে (ভুয়া সমাজতন্ত্র)। অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই জাসদ তাদের কাজে উৎসাহিত করছে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ রাষ্ট্র বাস্তবে অনুপস্থিত ছিল। আ স ম রব ও হাসানুল হক ইনু তাদের মধ্যে অন্যতম সহযোগী ছিল। এখানে উল্লেখ্য যে, ১৯৮৮ সালে হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের সহযোগী হিসেবে সামরিক সরকারের অংশীদারের জন্য ৭২ দল নামক একটি সর্বদলীয় সম্মিলিত বিরোধী দল একটি মোর্চা ঈড়সনরহবফ ঙঢ়ঢ়ড়ংরঃরড়হ চধৎঃু গঠন করেন। এরশাদ সরকারকে বৈধতা দেওয়ার জন্য তারা ৮৮’র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে একটি ভোটারবিহীন নির্বাচন সম্পন্ন করে এবং জনাব আ স ম রব এই ভোটারবিহীন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলের নেতা হন। এই শহীদুল্লাহ ফরাজী তার অন্যতম সহযোগী ছিলেন। জাসদ সমাজতন্ত্রের নামে গণবাহিনী সৃষ্টি করে বাংলাদেশের হাজার হাজার যুবকের জীবন নষ্ট করেছে।
বাংলাদেশের মানুষ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল এবং মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য পশ্চিম পাকিস্তানের বিরোধীতা করে মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিরা ঝাপিয়ে পড়ে। সেই আওয়ামী লীগের ভোটারবিহীন নির্বাচন করতে সহযোগিতা করেন জনাব আ স ম রব, হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেনন। তারা মন্ত্রীত্বের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে ১৯৮৮, ১৯৯৬, ২০০৪, ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারবিহীন নির্বাচন করতে সক্রিয় সহযোগিতা করেন। ১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে ও পশ্চিম পাকিস্তানের সন্ত্রাসী বাহিনী ও সামরিক বাহিনী দ্বারা নির্যাতন করে তাদের পাকিস্তান রক্ষা করতে পারে নাই এবং এদেশের সাধারণ মানুষ আবাল, বৃদ্ধ, যুবক, সর্বস্তরের জনগণ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। ৫৩ বছর পরে আজও বাংলাদেশে ভোটারবিহীন নির্বাচন আওয়ামী লীগ চালু রেখেছিল যা দেশের সর্বস্তরের জনগণ কখনো মেনে নেয়নি। বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ছাত্র-জনতার আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসককে হটিয়ে ৫ই আগস্ট বাংলাদেশে নতুন স্বাধীনতা লাভ করেছে।
১৯৭১ সালে যে স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি সেটা ছিল ভূগোলিক স্বাধীনতা। মূলত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা ছিল না, মানুষের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। কিন্তু ৫ই আগস্টের যে স্বাধীনতা মানুসের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সকল বৈষম্যবিরোধী অবসান ঘটিয়ে সমাজের ন্যায় বিচার, মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply