বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল করার নামে লোপাট হয়েছে কোটি টাকা। দুই কোটি টাকার কাজ শেষে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে তিন কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এমন পুকুর চুরি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতে। নকশা না মেনে তৈরি হয়েছে ভবন, উদ্বোধনের আগেই ছাদ থেকে ঝরছে পানি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ভবনে হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল। টেন্ডারে অংশ নেয় অনিক কনস্ট্রাকশন নামে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান। আর কোন প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশ না নেওয়ায় ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে নিজেদের কব্জায় বাগিয়ে নেয় কাজ। পুরো কাজের খরচ ধরা হয় ২ কোটি ৬৯ হাজার টাকা।
অনিক কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার কলিমউল্লাহ বলেন, কথাবার্তায় এমনই ছিল। ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে কাজে যা লাভ হবে তা সমান সমান।
এরপর শুরু রীতিমত হরিলুট। মূল নকশায় মেমোরিয়ালের উপর উন্নতমানের টেনজাইল ফেব্রিক দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে ককশিট এবং স্টিল। অথচ তুলে নেওয়া হয়েছে আটাশ লাখ টাকা। শুধুই তাই নয়, দুর্বা ঘাস দিয়ে বাগানের নামে ২০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। বাস্তবে সবই প্লাস্টিকের ঘাস। এসব পুকুর চুরির ফল এখন দৃশ্যমান হচ্ছে। উদ্বোধনের আগেই মেমোরিয়ালের ছাদ দিয়ে পড়ছে পানি ।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মাহমুদুজ্জামান বলেন, কাজ এখনো অসম্পূর্ণ। ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। জুন মাসে তাড়াহুড়ো করে কাজ করেছে।
ছাদে বালু ভরাটের নামে দেখানো হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। ৪৮ হাজার টাকার এসি কিনে দেখানো হয়েছে তিন লাখ ১০ হাজার টাকার খরচ। বার্মাটিক কাঠের বদলে দেওয়া হয়েছে আম কাঠ। শুধুই তাই নয়, বাস্তবে না থাকলেও দরপত্রে উল্লেখ দেখিয়ে, ১৫ টি নির্মাণ সামগ্রীর নামে টাকা তুলে নিয়েছে অনিক কনস্ট্রাকশন।
দরপত্র অনুসারে কাজের যখন এই অবস্থা, তখন আরও ৫৬ লাখ টাকার অতিরিক্ত কাজ দেখিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি তুলে নিয়েছে তিন কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
অনিক কনস্ট্রাকশনের মালিক গোলাম মোস্তফা বলেন, এটা কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করবেন, তারা নকশা দেখে বুঝে নিয়েছেন, নাকি নেননি।
বিবিএসের মহাপরিচালক তাইজুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে কাজ হলেও এ বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতেই রাজি হননি। আর কাজ বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যানের দাবী, কিছুটা পরিবর্তন হলেও কোন দুর্নীতিই হয়নি।
আর পুরো কাজটার যারা নকশা করেছেন, তাদের অনুপস্থিতিতেই হয়েছে জোড়াতালির কাজ।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply