বর্তমানে এমন কোন মুখরোচক খাবার নেই যাতে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার হয়না। দেদারসে যত্রতত্র ব্যবহার হচ্ছে টেস্টিং সল্ট। কেন? কারণ খাবার মুখরোচক মজাদার হয় এজন্য। ফুচকা, চটপটি, হালিম, চিপস, চানাচুর, বিস্কুট, পিৎজা, সমুচা, সিঙ্গারা, পুরী, বেকারি ফুড, ফাস্ট ফুড, গাছতলা কিংবা রাস্তার খাবার, ছালাদিয়া রেষ্টুরেন্ট, ফুটপাত, ৩ তারকা হোটেল, ৫ তারকা হোটেল, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, বাংলা, থাই, হোটেল, রেস্টুরেন্ট সবাই দেদারসে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করছে। টেস্টিং সল্ট একটি স্নায়ুবিষ। এ পর্যন্ত এই “স্নায়ুবিষ” এর বিরুদ্ধে কোন আইন নেই আমাদের দেশে!
টেস্টিং সল্ট এর ক্ষতিকর দিকগুলোর বিষয়ে জানতে গিয়ে জানা যায়, “চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা টেস্টিং সল্টকে স্নায়ুবিষ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিশেষজ্ঞরা জানান, টেস্টিং সল্ট মস্তিস্ককে উদ্দীপ্ত করে এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি করে যাতে মনে হয়, খাবারটি খুবই সুস্বাদু। ফলে ওই খাবারের প্রতি আসক্তি বাড়ে যায়। শিশুরা ভীষণ পছন্দ করে।
মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর টেস্টিং সল্ট মিশ্রিত খাবার সরবরাহ নিষিদ্ধ করতে সরকারকে উদ্যোগী হতে আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ব ম ফারুক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কয়েক বছর আগে স্নায়বিক অসুস্থতার লক্ষণযুক্ত নতুন রোগের কথা জানায়, যার নাম দেওয়া হয় ‘চায়নিজ রেস্টুরেন্ট সিনড্রোম’। টেস্টিং সল্ট মানবদেহে প্রবেশ করে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে বিষিয়ে তোলে। ফলে স্নায়ুতন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। ঘুম কম হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে স্বাভাবিক খাবার অরুচিকর লাগে। কাজে মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়।
অধ্যাপক ফারুক আরও বলেন, টেস্টিং সল্টকে বিজ্ঞানীরা উদ্দীপক বিষ নামে অভিহিত করেছেন। নিয়মিত টেস্টিং সল্ট ব্যবহারকারীদের মধ্যে মাথাব্যথা, খিঁচুনি, হরমোন নিঃসরণে গোলযোগ, মনোবৈকল্য, শিশুদের ক্ষেত্রে লেখাপড়ায় কম মনোযোগ. অতিরিক্ত ছটফটানি ভাব, হাঠৎ ক্ষেপে যাওয়া, মুটিয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। অ্যাজমায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা টেস্টিং সল্ট খেলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া এটি মস্তিস্কে ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। বিশ্বের কয়েকটি দেশে টেস্টিং সল্ট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশেও এটি নিষিদ্ধ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply