২১ অক্টোবর সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে গাজীপুর জেলার কাশিমপুরে ৪৮ পরিবার তাদের আদি ভিটা বাড়ী উদ্ধার এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, জান-মাল রক্ষা, ন্যায় বিচার ও প্রতিকারের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, ভূমি উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে সাহায্য চেয়ে সংবাদ সম্মেলন এবং সংবাদ সম্মেলন শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কাফনের কাপড় পড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা ও জাতীয় জনতা ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলা পোস্টের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদারের পরিচালনায় ৪৮ ভিকটিম পরিবারের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোঃ ইসমাইল মিয়া, ফজলুর রহমান, দেলোয়ারা বেগম, ইসহাক আলী, আব্দুর রহিম, ভানু, সামেলা, শাহনাজ, সেলিনা, ইরা, জোছনা বেগম, উর্মীসহ প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ ঈসমাইল মিয়া ৪৮টি পরিবারের পক্ষে বলেন, দখলবাজ, সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু যারা ৪৮টি পরিবারকে বিগত ৯ বছর সর্বহারা করে ফেলেছে এবং বিভিন্ন সময় হামলা-মামলা করে জখম করেছে ও ভয়Ñভীতি প্রদার্শন করেছে তারা হলো- কাশিমপুরের মৃত আশরফ খানের ছেলে বিবাদী মিজানুর, হাসনাইন, মোশাররফ হোসেন, হাতীমারা, হাফিজুর রহমান রাজু, মৃত সাহেব আলীর সন্তান- হযরত, ওসমান, ছিদ্দিক, হাসনা বেগম, বিমলা খাতুন, হাতীমারা গোবিন্দ বাড়ীর সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে আইরিন বেগম, মৃত নায়েব আলীর সন্তান- মোছাঃ সাহেরা বেগম, মোঃ মজিবুর শেখ, মোঃ আব্দুল মান্নান শেখ, মোঃ হান্নান, মোঃ মিনহাজ উদ্দিন শেখ, আব্দুল হাকিম বাচ্চু মিয়া, আব্দুল হাকিম বাচ্চু মিয়ার সন্তান- ফারুক মিয়া, খলিল মিয়া, শাহনাজ এবং মীর আকবর, নাছির সহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জন। তারা সকলেই গাজীপুর মহানগর কাশিমপুর থানার। এই সন্ত্রাসীরা আমাদের ৪৮ পরিবারকে এক মুহুর্তের জন্য শান্তিতে থাকতে দেয়নি। আমরা অতি সাধারণ মানুষ। আমাদের পরিবারে কেউ কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত না। আমরা দিন আনি দিন খাই। আমাদের সন্তানরাও এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি), টঙ্গী রাজস্ব সার্কেল গাজীপুর-এর ১১৮/২৪ একটি মামলা রয়েছে। এই মামলায় আমরা হাজিরা দিতে গেলে মান্নান ও ছিদ্দিক সহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন পথে বাধাগ্রস্থ করে এবং জীবননাশের হুমকি দেয়। তারা ইসমাইল মিয়া ও তার ভাই এছাক মিয়াকে ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর পৈতৃক ভিটা কাশিমপুর গোবিন্দ বাড়ি থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ইসমাইল মিয়া ও এছাক মিয়াকে অজ্ঞাত স্থানে পাশের গজারি বনে তুলে নিয়ে আটক রেখে রাতভর হাতুড়ি, কাঠ ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে নির্মম নির্যাতন ও রক্তাক্ত করে মৃত ভেবে রেখে যায়।
ভুক্তভোগী পরিবার একাধিকবার অভিযোগ নিয়ে এবং নিরাপত্তার জন্য পুলিশের কাছে গেলেও কোন অদৃশ্য কারণে তারা সহযোগিতা করেনি। তাছাড়াও বিগত ০৯ বছর যাবৎ সশস্ত্র হামলা, গুম খুনের ভয় ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ৪৮টি পরিবারকে গাজীপুরের পৈতৃক ভিটায় আসা থেকে বিরত রেখেছে এবং ৪৮টি পরিবারের অজান্তে সন্ত্রাসীরা নিজেরাই বাদী-বিবাদী হয়ে এবং ভূয়া ওয়ারিশ পরিচয়ে অপকৌশলে জমির কাগজপত্র জাল-জালিয়াতি করে ৪৮টি পরিবারের ৫ টা খতিয়ানের ২৩০ শতাংশ বৈধ পৈত্রিক সম্পত্তি অবৈধ ভাবে আত্মসাত করে বিক্রি করেছে। বর্তমানে অবশিষ্ট ১৫০ শতাংশ পৈত্রিক জমিও আত্মসাৎ করার পায়তারা করছে। আমরা ভেবেছিলাম ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের পর আমরা আমাদের জায়গা বুঝে পাবো। কিন্তু এখনও তারা এক শ্রেণীর ভূমিদস্যু ও দখলবাজদের সাথে আতাত করে এলাকায় অবস্থান করছেন এবং আমাদেরকে আমাদের জন্মভিটায় প্রবেশ করতে বাধাগ্রস্থ করছে। আজ আমরা কাফনের কাপড় পড়ে এসেছি। বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা বলেন, আমাদেরকে মেরে ফেলুন তা না হলে এই সন্ত্রাসীদের কবল থেকে আমাদেরকে উদ্ধার করুন। সংবাদ সম্মেলন শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ৪৮টি ভিকটিম পরিবারের সদস্যরা প্রতিকী অনশন করেন।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply