শবে বরাত অর্থাৎ হলো, আরবি বছরের শা’বান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত। হাদিস শরীফে হযরত রাসুল (সাঃ) এ রজনীকে “লাইলাতুন নিসফি মিন শা’বান অর্থাৎ অর্ধ শা’বানের রজনী” বলে আখ্যায়িত করেছেন। অতঃপর তিনি বলেছেন, “মুশরিক, হিংসুক ও মানুষ হত্যাকারী ব্যতীত এ রাতে মহান আল্লাহ সকলকে ক্ষমা করে দেন” হযরত রাসুল (সাঃ) বিশেষ ইবাদত-বন্দেগীর মধ্য দিয়ে এ রাতকে অতিবাহিত করতেন। মহিমান্বিত এ রজনীকেই ‘শবে বরাত অর্থাৎ মুক্তির রজনী’ বলা হয়।
পবিত্র কুরআনের আলোকে শবে বরাতের গুরুত্ব।
শবে বরাতকে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে “লাইলাতুম মুবারাকাহ তথা বরকতময় রজনী” বলেছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, “হা-মীম, কসম সুস্পষ্ট কিতাবের! আমি তো একে নাযিল করেছি, এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। আমার নির্দেশক্রমে এ রাতে (বরকতময় রজনী বা শবে বরাতে) প্রত্যেক হিকমতপূর্ন বিষয় স্থিরীকৃত হয়।” (সূরা-আদ্ দুখান, আয়াত ১ থেকে ৫)
প্রকৃতপক্ষে শবে বরাতের রজনীতে মহান আল্লাহ সম্পূর্ণ কুরআন লাওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ায় নাযিল করেন। অতঃপর তিনি রমজান মাসের কদরের রজনী থেকে অল্প অল্প করে কুরআন নাযিলের যাত্রা শুরু করেন। এমনিভাবে পৃথিবীর প্রত্যেকটি বিষয়ের এক বছরের সিদ্ধান্ত শবে বরাতের এ রাতেই গ্রহণ করা হয়।
হাদিস শরীফের আলোকে শবে বরাতের গুরুত্ব।
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, “আল্লাহ তায়ালা চারটি রাতে সর্বপ্রকার কল্যাণের দরজা খুলে দেন। যথা- ১. ঈদুল আজহার রাত। ২. ঈদুল ফিতরের রাত। ৩. অর্ধ শা’বান বা শবে বরাতের রাত। এ রাতে হায়াত, রিজিক লিপিবদ্ধ করা হয় এবং হাজীদের তালিকা তৈরি করা হয়। ৪.আরাফাতের রাত, ফজরের আযান পর্যন্ত।” (তাফসীরে দুররে মানছুর-২৫তম খন্ড, পৃষ্ঠা- ৪০২)
শেরে খোদা হযরত আলী (কাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এরশাদ করেন, “অর্ধ শা’বান বা শবে বরাতের রাতে তোমরা জাগ্রত থেকে ইবাদত করো, আর দিনের বেলায় রোজা রাখো। কারণ এ রাতে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার নিকটবর্তী আকাশে এসে জগৎবাসীকে আহবান করে বলেন, কোনো ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করব। কোনো রিজিক অন্বেষণকারী আছে কি? আমি তাকে রিজিক দেব। কোনো রোগাক্রান্ত আছে কি? আমি তাকে সুস্থ করে দেব। এভাবে মহান আল্লাহ ভোর পর্যন্ত ডাকতে থাকেন।” (মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা- ১১৫)
সুতরাং, এ রাতের রহমত-বরকত অপরিসীম। মহান আল্লাহ এই মহিমান্বিত রাতের উসিলায় আমাদের পাপীতাপী বান্দাদের মুক্তির ফয়সালা দেন করুন। (আমিন)
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply