ঋতম্ভরা বন্দোপাধ্যায়, কলকাতা: এই বিশ্ব জগতে জল ছাড়া কোনও প্রাণী টিকে থাকতে পারেনা। শরীরে জলের কোনও রাসায়নিক বিক্রিয়া নেই। কিন্তু জল ছাড়া জীবনে শক্তি নেই। সারাদিনে তিন থেকে চার লিটার জল অবশ্যই পান করতে হবে। যেকোনও খাবার খাওয়ার আধঘন্টা পর জল পান করা উচিত কারণ আমাদের খাবার খাওয়ার সাথে সাথে শরীরে কতগুলি সিক্রিশন তৈরি হয় আর যা খাবার কে হজম করতে সাহায্য করে। তাই খাবার খাওয়ার সাথে সাথে জল খেলে সিক্রিশন ধুয়ে যায় আর সারাদিন হজমের ব্যাঘাত ঘটে। প্রথমে ঘুম থেকে উঠে দুই গ্লাস ঈষৎ গরম জল পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে আরাম পাওয়া যায়। রাত্রে শোবার আধঘন্টা আগে একগ্লাস গরম জল খেলে ভালো ঘুম হয়। খাবার জল পনেরো কুড়ি মিনিট ফুটিয়ে ঠান্ডা করে ছেঁকে খেলে তাতে শরীর থাকবে অত্যন্ত চাঙ্গা। ঈষৎ গরম জলের সঙ্গে লেবুর রস ও মধু খেলে শরীরের মেদ কমে ও শরীর চাঙ্গা হয়ে যায়। হাল্কা গরম জল শরীরের হজমের সমস্যা দূর করে,পরিপাক প্রক্রিয়া কাজ করে নানান পেটের সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে। এর ফলে গ্যাস , অম্বল ও এসিডের সমস্যা দূর করে। বর্ষার রাতে খুব ঘুম পায় তাই সে কারণে গরম জল পান করলে অনিদ্রা সংক্রান্ত সমস্যা দূর হয় ও ভালো ঘুম হয়। প্রতিদিন রাত্রে ঈষৎ গরম জল পান করলে রক্ত সংবহন প্রক্রিয়া ভালো হতে পারে এবং হাতে পায়ে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। হার্ট ভালো থাকবে, ফলে হার্ট সংক্রান্ত নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
রোজ সকালে তেজপাতা ফোটানো জল খেলে শরীরের সমস্যা নিয়ে ভাবনা অনেক কমে যাবে। তেজপাতার মধ্যে থাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-সিক্স ও ভিটামিন সি। এই ভিটামিন গুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তেজপাতা শ্বাস কষ্ট থেকে মুক্তি দেয়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। জলের মধ্যে তেজপাতা ফেলে পাঁচ থেকে দশ মিনিট সেদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর আঁচ বন্ধ করে জল ঠান্ডা করে নিতে হবে। সেই জল ফিল্টার করে গরম গরম পান করতে হবে। এর মধ্যে সামান্য আদা ও লেবুর রস মিশিয়ে দিলে আরো ভালো হবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,যা শরীর কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা এবং বদহজমের সমস্যা মেটাতে সাহায্য করে এই পাতা। এটি শরীরে দারুণ শক্তি জোগায় এবং ক্লান্তি দূর করে। এ পাতার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো বেড়ে যায়,ফুসফুস হৃদপিণ্ড কে সুরক্ষিত রাখে। তেজপাতার তেজে তেজস্বী হওয়ার জন্য প্রতিদিন জলে, ঝালে, ঝোলে, অম্বলে তেজপাতা সেবন করতে হবে। তেজপাতা মেদ কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে আর বলিরেখা দূর করে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply