November 21, 2024, 11:49 am

তথ্য ও সংবাদ শিরোনামঃ
বেনাপোল ধান্যখোলা সীমান্তে ৩৬ কেজি গাঁজাসহ ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার। টঙ্গীবাড়ীতে বীজ আলু ও সার ব্যাবসায়ী দের সাথে ইউএনওর মত বিনিময় সভা। বেনাপোল দিয়ে ভারতে পাচার হওয়া ২৪ জন কিশোর ও কিশোরী দেশে ফিরেছে। আ.লীগ নেতার জবর দখলে থাকা সরকারি ১২ বিঘা জমি উদ্ধার। রাজধানীতে কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ। ১৫ বোতল ফেন্সিডিল সহ ০১ জন আসামী গ্রেফতার। যশোর পর্যটন খাতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়া হবে। উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বেনাপোল বন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু। বেনাপোলের শহীদ আব্দুল্লাহর কবর জিয়ারত করলেন উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের রূপরেখা না থাকায় আশাহত হয়েছে বিএনপি। ভালুকায় দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাজার মনিটরিং ধনবাড়ী উপজেলার নব নিযুক্ত নির্বাহী অফিসারের সাথে ধনবাড়ী উপজেলা মডেল প্রেসক্লাবের সদস্যদের সৌজন্য সাক্ষাৎ। নওগাঁ পত্নীতলার ডিগ্রি চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সুমন হোসেন কে হত্যা করে গলায় ফাঁসি দিয়ে কাঁঠাল গাছের ঝুলিয়ে রহস্য জনক মৃত্যু। শার্শায় ৪ যুগ ধরে খবরের কাগজের ফেরিওয়ালা সিরাজ আর নেই। রাজনৈতিক গুরু হিসেবে মওলানা ভাসানীকে স্বীকৃতি দিতে হবে …… অধ্যক্ষ এম শরিফুল ইসলাম বেনাপোল হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন ৯২৫ এর বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত। যশোর যৌনকর্মী প্রেমিকাকে নিয়ে দ্বন্ধে হেলপার বাপ্পি খুন। মওলানা ভাসানীকে অপমান করায় আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত প্রায় বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে সাহিত্য ও সংস্কৃতির সংস্কার চাই – রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী। ভালুকায় জমি দখল ও খেতের ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ মওলানা ভাসানীকে স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার দাবি …. বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস। দেশপ্রেমিক লোকদের সঠিক প্রক্রিয়ায় যাচাই বাছাই করে নিয়োগ দিতে হবে …… অধ্যাপক ড. সায়েদা ওবায়েদ যশোর বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের কর্তৃক ৩০ বোতল ফেন্সিডিল ও ১ কেজি গাঁজা সহ ০১ জন আটক। ওষুধের দাম কমানোর আহ্বান ……এম এ আলীম সরকার গাজীপুর কোনাবাড়ীতে আবাসিক হোটেলে চলছে নারী ও মাদকের রমরমা ব্যবসা যশোর যাত্রীবাহী বাসের ভেতর থেকে রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ঢাকাই সিনেমার একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক রুবেল। কোটায় চাকরিপ্রাপ্তদের তালিকা যাচাই-বাছাই করছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। গলি থেকে রাজপথ শ্যামবাজারের রক থেকে উঠে প্রাসাদে মিঠুন চক্রবর্তী

আশুরার ঐতিহাসিক সম্মানিত, তাৎপর্যপূর্ণ এবং হৃদয়বিদারক ঘটনাবলী।

আশুরার ঐতিহাসিক সম্মানিত, তাৎপর্যপূর্ণ এবং হৃদয়বিদারক ঘটনাবলী।

হিজরি সনের প্রথম মাস মহররম। ‘মহররম’ শব্দের অর্থ সম্মানিত। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর নিকট মাসের সংখ্যা বারো, এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। (সূরা: তাওবা, আয়াত: ৩৬)। এ চার মাসের বৈশিষ্ট্য হলো, যারা বিশেষভাবে এ মাসগুলোতে ইবাদত-বন্দেগি করবে, আল্লাহ তাআলা তাদের বাকি আট মাস ইবাদত করার তাওফিক দান করবেন এবং যারা এ চার মাস নিজেকে গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখবে, তাদের জন্য বাকি আট মাস যাবতীয় পাপকাজ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হবে।

চন্দ্রবর্ষের বারো মাসের মধ্যে মহররমকেই ‘শাহরুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর মাস’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর পবিত্র কোরআনে উল্লিখিত সূরা তাওবার ৩৬ নম্বর আয়াতাংশে ‘আরবায়াতুন হুরুম’ অর্থাৎ ‘অতি সম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ চার মাস’ বলতে জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব এই চার মাসকেই বোঝানো হয়েছে।

মহররম মাসের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। এই দিনটি সারা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। এই দিনের বিশেষ তাৎপর্য হলো, এই দিনেই পৃথিবীর বহু ঐতিহাসিক ও অলৌকিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

এই দিনেই সৃষ্টি করা হয় আমাদের আদি পিতা হজরত আদম (আঃ) কে, এই দিনেই তাঁকে বেহেশতে প্রেরণ করা হয়, এই দিনেই তাঁকে বেহেশত থেকে দুনিয়ায় প্রেরণ করা হয় এবং এই দিনেই তাঁদের উভয়কে (আদম-হাওয়া) আরাফাতের ময়দানে একত্র করা হয় ও তাঁদের ভুল-ত্রুটি মার্জনা করা হয়। অধিকন্তু এই দিনেই তিনি ইন্তেকাল করেন।

এই দিনেই মুসলিম জাহানের পিতা হজরত ইব্রাহিম (আঃ) কে আল্লাহ তাআলা অশেষ মেহেরবানিতে অগ্নিকুণ্ড থেকে মুক্তি দেন, যখন নমরুদ বাহিনী তাঁকে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করে।

এই দিনেই হজরত মুসা কালিমুল্লাহ (আঃ) নীল নদ পার হয়ে ফেরাউনের কবল থেকে মুক্তি পান এবং ফেরাউন দলবলসহ নীল নদে ডুবে মারা যায়।

এই দিনেই দীর্ঘ সময় ধরে প্রবল বন্যার পর ‘আদমে সানি’ বা ‘দ্বিতীয় আদম’ উপাধিতে ভূষিত হজরত নূহ (আঃ)-এর নৌকা জুদি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থান করে এবং তিনি ও তাঁর অনুসারী ইমানদার ব্যক্তিরা বেঁচে যান। পক্ষান্তরে যারা তাঁর প্রতি ইমান আনেনি, তারা সবাই মৃত্যুমুখে পতিত হয়।

এই দিনেই ছাহেবে হুত নামে অভিহিত হজরত ইউনুস (আঃ) রাতের অন্ধকারে, পানির গভীরে ও মাছের পেটে এই তিন স্তরের অন্ধকার থেকে মুক্তি পান।

এই দিনেই হজরত আইউব (আঃ) সুদীর্ঘ ১৮ বছর রোগভোগের পর পূর্ণ সুস্থতা লাভ করেছিলেন। তিনি এমন সুস্থতা লাভ করেছিলেন যে তাঁকে দেখে তাঁর স্ত্রীও চিনতে পারেননি। এটা হচ্ছে মহান আল্লাহর মহা অনুগ্রহের ফলমাত্র এবং নবীদের অন্যতম হজরত আইউব (আঃ) এর কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার বহিঃপ্রকাশ।

এই দিনেই হজরত ঈসা মাসিহ (আঃ) জন্মগ্রহণ করেন এবং এই দিনে ত্রিতত্ত্ববাদীদের রোষানল থেকে বাঁচানোর জন্য আল্লাহর অশেষ কুদরতে তাঁকে আসমানে উঠিয়ে নেওয়া হয়, যা পবিত্র কোরআনে সূরা আলে ইমরানের ৫৫ নম্বর আয়াতে উল্লেখ রয়েছে।

এই দিনেই হজরত মুসা (আঃ) আল্লাহর সঙ্গে তুর পাহাড়ে গিয়ে কথা বলেন এবং ইবরানি ভাষায় নাজিলকৃত প্রসিদ্ধ কিতাব তাওরাতপ্রাপ্ত হন।

এই দিনেই হজরত ইয়াকুব (আঃ) এর অতি স্নেহের সন্তান, পরে মিসরের সম্রাটের স্বপ্নের তাবির বা ব্যাখ্যাকার হজরত ইউসুফ (আঃ) কে বহুকাল পরে ফিরে পান এবং তাঁর সন্তান হারানো বেদনার অবসান হয়।

এই দিনেই রাসুলে আরাবি নবীকুল শিরোমণি, ইমামুল হারামাইন, সাইয়্যদুস সাকালাইন, শাফিউল উমাম, ছাহেবে কাউসার, ছাহেবে কোরআন, হাদিউল উমাম, ইমামুল মুরসালিন জনাবে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সর্বপ্রথম ওহিপ্রাপ্ত হন।

এই দিনেই হজরত সোলায়মান (আঃ) সিংহাসন লাভ করেন। যাতে করে প্রতিদিন তিনি সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর সৈন্যসামন্ত নিয়ে এক মাসের রাস্তা ভ্রমণ করতেন, যা পবিত্র কোরআনের সূরা সাবার ১২ নম্বর আয়াতে উল্লেখ রয়েছে।

এই দিনেই আল্লাহ তাআলা এই পৃথিবীতে সর্বপ্রথম রহমতের বৃষ্টি বর্ষণ করেন।

আশুরার দিনে সংঘটিত সর্বশেষ ঐতিহাসিক ঘটনা হচ্ছে হজরত হুসাইন (রাঃ) এর শাহাদাত। ইতিহাসটা অনেকটা এ রকম যে, কূফাবাসী একের পর এক চিঠি হজরত হুসাইন (রাঃ) এর কাছে পাঠাতে লাগলেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, তারা ইয়াজিদের পরিবর্তে আপনার হাতে বাইয়াত হতে চায়। এক পর্যায়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য মুসলিম ইবনে আকিলকে পাঠানো হয়। তখনো কূফার অবস্থা ছিল শান্ত। তাই কূফাবাসীর আবেগের কোনো কমতি ছিল না। তাই মুসলিম ইবনে আকিল হুসাইন (রাঃ) এর কাছে পত্র লেখে জানান যে, তাদের কথা বাস্তব আপনি কূফায় চলে আসুন। পত্র পাঠানোর পরপরই কূফার শাসক পরিবর্তন হয়। ইয়াজিদের পক্ষ থেকে উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদ কূফার শাসক হন। সে ছিল নিষ্ঠুর প্রকৃতির। তার হুমকিতে কূফাবাসী নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসে। এমনকি মুসলিম ইবনে আকিলকেও তারা থাকার সুযোগ দিতে রাজি হয়নি। এক পর্যায়ে তাকে গ্রেফতার করে হত্যা করা হয়। এদিকে এতকিছু হচ্ছে কিন্তু সে সংবাদ মদীনায় পৌঁছেনি। তাই হুসাইন (রাঃ) মুসলিম ইবনে আকিলের চিঠি মোতাবেক প্রস্তুতি নিয়ে রওয়ানা হয়ে যান।

অবশেষে ৬১ হিজরির মহররম মাসের আশুরার দিন কারবালায় শাহাদাত বরণ করেন। তখন তার বয়স ছিল ৫৪ বছর ছয় মাস পনের দিন।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলে করিম (সাঃ) হিজরত করে মদিনায় আগমন করার পর দেখলেন, ইহুদিরা আশুরার দিনে রোজা রাখে। রাসূল (সাঃ) এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা বলল, এই দিনে হজরত মুসা (আঃ) ও বনি ইসরাইল শক্রবাহিনী থেকে মুক্তি লাভ করেছিলেন, তাই এই দিনে হজরত মুসা (আঃ) এর শুকরিয়া আদায়স্বরূপ রোজা রেখেছেন। তা শুনে রাসুলে পাক (সাঃ) বললেন, হজরত মুসা (সাঃ)-এর অনুসরণের ব্যাপারে আমি তোমাদের চেয়ে বেশি হকদার; তাই এই দিনে তিনি রোজা রাখেন এবং অন্যদেরও রোজা রাখার হুকুম দেন। কিন্তু কেবল আশুরার দিনে রোজা রাখলে বাহ্যিকভাবে ইহুদিদের অনুকরণ হয়ে যায়। তাই রাসুলে মাদানি (সাঃ) বলেন, তোমরা আশুরার রোজা রাখো এবং ইহুদিদের সাদৃশ্য পরিহার করো। অর্থাৎ আশুরার আগে বা পরে আরও এক দিন রোজা রাখো। অর্থাৎ মহররমের ৯, ১০ অথবা ১০, ১১ এই দুই দিন রোজা রাখো।

উম্মুল মুমিনিন হজরত হাফসা (রাঃ) বলেন, রাসুলে পাক (সাঃ) চারটি কাজ কখনো ত্যাগ করেননি। (১) আশুরার রোজা, (২) জিলহজের প্রথম নয় দিনের রোজা, (৩) আইয়ামে বিযের রোজা তথা প্রতি মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখের রোজা, (৪) ফজর ওয়াক্তে ফরজের আগে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ।

হজরত কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসুলে পাক (সাঃ) ইরশাদ করেন, আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী, আল্লাহ তাআলা এর অছিলায় অতীতের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন। (তিরমিজি)।

হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলে পাক (সাঃ) এরশাদ করেন, রমজানের রোজার পরে মহররমের রোজা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ, যেমন ফরজ নামাজের পরে শেষ রাতের নামাজ অর্থাৎ তাহাজ্জুদ নামাজ সবচেয়ে বেশি মর্যাদাসম্পন্ন।

এ দিবসে সঠিক ফজিলত অনুধাবন করে সঠিক ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর অশেষ রহমত বা করুণার আশায় মাগফিরাতের প্রত্যাশায়, এই দিনের মহান ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত, রাসুল (সাঃ) প্রদর্শিত পথে এগিয়ে চলার অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়া উচিত।

পরিশেষে মহান আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিনের দরবারে দোয়া কামনা করি, তিনি যেন আমাদের পবিত্র আশুরার তাৎপর্য অনুধাবন করে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।

সুফী মোহাম্মদ আহসান হাবীব
তাসাউফ সাধক ও গবেষক

আমাদের প্রকাশিত তথ্য ও সংবাদ আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)

Design by Raytahost.com